আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরায়েলের হামলায় লেবাননের হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহর মৃত্যুর পর এখন দলটির নেতৃত্ব কে দেবেন সামনে এসেছে সে প্রশ্ন। হিজবুল্লাহর কেবল নাসরাল্লাহই নন বরং বলতে গেলে প্রায় সব শীর্ষ নেতাই ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছে।
দলের নেতৃত্ব এখন কে দেবেন সে ব্যাপারে হিজবুল্লাহ এখনও বিবৃতি দিয়ে স্পষ্ট কিছু জানায়নি। তবে নাসরাল্লাহর কাজিন হাশেম সাফিয়েদ্দিন হিজবুল্লাহর নেতৃত্ব দিতে পারেন, শোনা যাচ্ছে এমন কথা।
তার সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স:
নির্বাহী পরিষদের প্রধান হিসাবে সাফিয়েদ্দিন হিজবুল্লাহর রাজনৈতিক বিষয়গুলো দেখভাল করেন। হিজবুল্লাহর সামরিক অভিযান পরিচালনাকারী জিহাদ কাউন্সিলেরও সদস্য তিনি।
সম্পর্কে হাসান নাসরাল্লাহর কাজিন হাসেম সাফিয়েদ্দিন তার মতোই একজন ধর্মীয় নেতা। তিনিও মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর বংশধরের প্রতীক হিসাবে কালো পাগড়ি পরেন।
২০১৭ সালে তাকে সন্ত্রাসীর তকমা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত জুনে এক হিজবুল্লাহ কমান্ডার নিহত হওয়ার পর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বড় ধরনের বদলা নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। সাফিয়েদ্দিন তখন বলেছিলেন, “শত্রুকে কান্না ও বিলাপের জন্য প্রস্তুত হতে বল।”
জনসম্মুখে হাসেম সাফিয়েদ্দিনের বিবৃতিতে প্রায়ই হিজবুল্লাহর সামরিক অবস্থান ও ফিলিস্তিনিদের জন্য সংহতির বিষয়টির প্রতিফলন ঘটে।
সম্প্রতি বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরতলী দাহিয়েহ এলাকায় হিজবুল্লাহর ঘাঁটিতে এক অনুষ্ঠানে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে তিনি বলেছিলেন, “আমাদের ইতিহাস, আমাদের বন্দুক ও আমাদের রকেট সবই আপনাদের সঙ্গে আছে।”
লেবাননের শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর গবেষক ফিলিপ স্মিথ বলেন, দলের বিভিন্ন পরিষদে সাফিয়েদ্দিনের জন্য বিভিন্ন পদ তৈরি শুরু করেছিলেন হাসান নাসরাল্লাহ, যার মধ্যে কিছু পদ ছিল অন্যদের চেয়েও বেশি বিশিষ্ট।
নাসরাল্লাহর সঙ্গে সাফিয়েদ্দিনের পারিবারিক সম্পর্ক, দৈহিক গড়নে নাসরাল্লাহর সঙ্গে সাদৃশ্য এবং ধর্মীয় মর্যাদাও একরকম হওয়ায় সবদিক থেকেই হিজবুল্লাহর নেতা হওয়া তার জন্য অনুকূল।
যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সমালোচনাতেও যথেষ্ট সোচ্চার হাসেম সাফিয়েদ্দিন। হিজবুল্লাহর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপের প্রতিক্রিয়ায় ২০১৭ সালে তিনি বলেছিলেন, “ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন মানসিক প্রতিবন্ধী ও পাগল মার্কিন প্রশাসন প্রতিরোধ আন্দোলনের কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। বরং তাদের কর্মকাণ্ড কেবল হিজবুল্লাহর সংকল্পই আরও দৃঢ় করবে।”