অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসের সাথে দুই সপ্তাহ ধরে চলমান যুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ৩০৭ সদস্য নিহত হয়েছেন। শনিবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে সেনাসদস্যদের প্রাণহানির এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গত ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩০৭ সৈন্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া হামাসের হামলায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। তবে আহত সৈন্যদের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি ইসরায়েল।
শনিবার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি সাংবাদিকদের বলেছেন, হামাসের যোদ্ধারা গাজা উপত্যকায় ২১০ জনকে জিম্মি করে রেখেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার মাঝে হামাস দুই মার্কিন জিম্মিকে ছেড়ে দেওয়ার পর হ্যাগারি জিম্মিদের এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেন।
দুই সপ্তাহ ধরে নিজেদের আস্তানায় ওই দুই মার্কিন নাগরিককে আটকে রেখেছিলেন হামাসের যোদ্ধারা। তাদের মুক্তির পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সব জিম্মিকে মুক্ত করার জন্য ইসরায়েল কাজ চালিয়ে যাবে।
হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হাজার হাজার রিজার্ভ সৈন্য যোগ দেওয়ায় বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটের তীব্র ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছে ইসরায়েল। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট প্রস্তুতকারক ইসরায়েলি একটি কোম্পানি বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেছে, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো বর্তমানে চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে।
এদিকে, ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত পরিদর্শন করে সামরিক বাহিনীর ৯১তম ডিভিশনের কমান্ডারের সাথে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত। শনিবার উত্তর সীমান্ত পরিদর্শনে গিয়ে সৈন্যদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, যুদ্ধে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হিজবুল্লাহ এবং এ জন্য চড়া মূল্য দিচ্ছে লেবাননের সশস্ত্র এই গোষ্ঠী। তবে আমাদের যেকোনো সম্ভাবনার জন্য অবশ্যই প্রস্তুত থাকতে হবে। সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।
গ্যালান্ত বলেন, ‘ঠিক দুই সপ্তাহ আগে দক্ষিণে হামাসের পক্ষ থেকে আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করা হয়েছিল। এই যুদ্ধের উদ্দেশ্য হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ এবং বেঁচে যাওয়া শিশু ও নারীদের ক্ষতি করা।’
তিনি বলেন, আর এসব দৃশ্য ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। এমনকি ইসরায়েলকে থামানোর জন্য হামাসের পক্ষ থেকে এসব ভিডিও আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আমরা এই যুদ্ধের পরিস্থিতি ১৮০ ডিগ্রিতে উল্টাতে যাচ্ছি। হামলার দিনটি এমনভাবে স্মরণ করা হবে যে ওইদিন হামাসের চূড়ান্ত বিলুপ্তি শুরু হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ভোরের দিকে মুহুর্মুহু রকেট নিক্ষেপের মাধ্যমে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে হামাস। দুই সপ্তাহ ধরে চলমান এই যুদ্ধে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাসের চালানো হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। আর ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৩৮৫ ফিলিস্তিনি নিহত ও আরও ১৩ হাজার ৫৬১ জন আহত হয়েছেন।