Date: November 23, 2024

দৈনিক বজ্রশক্তি

Header
collapse
...
Home / বিনোদন / বিয়ে নিয়ে যা বললেন ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়

বিয়ে নিয়ে যা বললেন ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়

February 14, 2023 12:08:23 PM   বিনোদন প্রতিবেদক
বিয়ে নিয়ে যা বললেন ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়

বিনোদন ডেস্ক
মেয়েদের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে বদলে যেতে থাকে তাদের পরিচয়। কখনো কারো মেয়ে হয়ে, কখনো বা কারো স্ত্রী হয়ে, পরে কারো মা হয়েই জীবনটা কাটিয়ে দিতে হয়। এই হলো জীবদ্দশায় তাদের পরিচয়ের বিবর্তন। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এই নিয়ম। নিয়ম ভেঙে বেরোনো বা তার প্রতিবাদ করতে বলা সহজ, কিন্তু বাস্তবে করে ওঠা কঠিন।
বিয়ে হলো না কেন বা ইচ্ছে না করলেও বৈবাহিক অবস্থান নিয়ে কথা বলতে হবে কেন, এই বিষয় নিয়েই সোমবার আনন্দবাজার অনলাইনে আলোচনায় বসেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষ এই পর্বে অতিথি ছিলেন আবৃত্তি শিল্পী ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়। ‌‘কী করে বলব? সঙ্গে অনুত্তমা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে মনোবিদ কথা বললেন পুরনো একটি বিষয় নিয়ে। কিন্তু সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে। বিষয়টি ছিল ‘বিয়ে করিসনি কেন’।
কোনো কারণ ছাড়াই বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া বা বিয়ের অবস্থান নিয়ে কথা বলতে না চাওয়াও সাধারণ পরিবারের মেয়েদের কাছে 'অপরাধ'। বেশির ভাগ মেয়ের মধ্যে আবার একটা ধারণা থাকে, সমাজে এমন স্তর বা তথাকথিত ‘এলিট’ সমাজের মেয়েদের বোধ হয় আত্মীয় কিংবা প্রতিবেশীদের করা এমন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় না। এমন ধারণা ভেঙে দিলেন ব্রততী নিজে। জানালেন, অজস্র বার আত্মীয়, অনাত্মীয় এমন বহু মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল তাকেও। 
ব্রততী বলেন, বিয়ে মানে তো একত্রে যাপন। তা যে শুধু নারী-পুরুষের মধ্যেই হতে হবে, তার তো কোনো মানে নেই। সৌভাগ্যবশত পরিবারের মানুষজনের কাছে এমন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়নি কোনো দিন। কিন্তু আত্মীয়-পরিজনের কাছে শুনতে হয়েছে বহু বার। কিন্তু আমি বলেছি, আবার বিয়ে হয়েছে, আমার কাজের সঙ্গে। কাজ এমনভাবে আমাকে সারা ক্ষণ ঘিরে রেখেছিল যে, আমি এই বিষয়ে ভাবার অবকাশ পাইনি।
কম বয়সে রঙিন জীবনে পা বাড়ানোর হাতছানি থাকে অনেক বেশি। আত্মীয়-অনাত্মীয়দের কানাকানি, দর্শক, শ্রোতাদের কৌতূহল মেটানো— এই সংকটে কিন্তু বেশি পড়তে হয় মেয়েদেরই। অনেক সময় পরিবার বা কাছের মানুষরা উদ্বেগ থেকেও তো এমন অনেক প্রশ্ন করেন! বেশি বয়সে যদি কোনও সমস্যা হয়, তখন কে দেখাশোনা করবে? এই ভাবনা কী ব্রততীর মনকে বিচলিত করেনি কখনো? প্রশ্ন মনোবিদের।
ব্রততীর উত্তর, ‌কম বয়সে মনে হয়নি। কিন্তু এখন বিশেষ করে অতিমারির সময়ে সত্যিই মনে হয়েছিল। তবে, এই যে দীর্ঘ সময় ধরে এত ছেলেমেয়ে তৈরি করলাম, তাদের কেউ না কেউ ঠিক আমার পাশে থাকবে। আমি আমার জীবন দিয়ে দেখেছি, অনেকের ক্ষেত্রেই বিপদের সময় রক্তের সম্পর্কের কাউকে পাশে পায়নি।
শুধু ব্যক্তিগত জীবন নয়, পেশাগত জীবনেও ছকভাঙা ব্রততী। নিশ্চিত স্থায়ী রোজগার ছেড়ে, পূর্ণ সময়ের জন্য আবৃত্তি করেছেন তিনি। তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অন্যের কৌতূহল মেটান কীভাবে? তার সম্পর্কে শ্রোতাদের মনগড়া নির্মাণ— এই সব সামাল দেন কীভাবে? সব সময়ে যে বিদ্রোহ করে জানান দিতে হয়, এমনও তো নয়।
অনুত্তমার কথার সূত্র ধরেই ব্রততী জানান, সবাইকে সব কিছুর উত্তর দেওয়া তো সম্ভব হয় না। তাই কিছু ক্ষেত্রে দূরত্ব রাখতে হয়। কাজই যে আমার প্রেম, সেটিই যে আমার ভালোবাসা, তা সবাইকে বোঝানোর প্রয়োজন নেই। আর সব চেয়ে বড় কথা, আমার মধ্যে কোনো সময়ে সেই শূন্যস্থান ছিলই না, যেখানে আমি অন্য কারো কথা ভাবতে পারি। কারণ, কাজই আমাকে সব দিক থেকে পূর্ণ করে রেখেছে। তাই যখন এই বয়সে আরো একবার ভেবে দেখার পরামর্শ দেন কেউ, আমি একমুখ হাসি নিয়ে তার দিকে চেয়ে থাকি।