রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের রজত জয়ন্তী পালনের পর থেকে সরকারী দল আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠন গুলোর বার্ষিক, দ্বিবার্ষিক ও ত্রিবার্ষিক সম্মেলন গুলো একে একে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত দুই ডিসেম্বর ছিল ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগের যৌথ বার্ষিক সম্মেলন। অবশ্য তাদের এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল ৮ ডিসেম্বর। কিন্তু ১০ ডিসেম্বর বিএনপিকে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ করার জন্য বরাদ্দ দেওয়ায় ছাত্রলীগের সম্মেলন এগিয়ে দু’ডিসেম্বর করা হয়। রংবেরঙের ব্যনার ফেস্টুন আর বিল বোর্ড দিয়ে ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশ পথসহ গোটা মাঠ সাজিয়েছিল। যা দেখে মুল দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রধান অতিথি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য এ ডিসেম্বরেই মুলদল আওয়ামীলীগেরও কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবার কথা। ছাত্রলীগ এদেশের বৃহত্তম ও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন তো বটেই স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতিটি বাঁকে বাঁকে ছাত্রলীগ এক গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু বিগত দু’দশক থেকে ছাত্রলীগ টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজি, হল দখল ও সিট বণ্টন সহ নানা অপরাধ মূলক কাজে জড়িয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, হলে ছাত্র নির্যাতন করে হত্যা ও টাকা আদায়ের খবরও গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। অন্যদিকে চলমান অর্থনীতিক সংকটের কারণে সাশ্রয়ী নীতিতে চলছে সরকার। সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে কৃচ্ছতা সাধনের আহবান জানানো হচ্ছে। অথচ ছাত্রলীগ উত্তর ও দক্ষিণ শাখার সম্মেলনে পদ প্রত্যাশীদের বাহুল্য খরচ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু ব্যনার ফেস্টুন বিল বোর্ডের জন্য দশ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে একটি সহযোগী দৈনিক হিসেব করে দেখিয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের দুপুরের খাবার। এবারের সম্মেলনের সংগঠনের দু’ ইউনিটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীর সংখ্যা তিন শতাধিক। অবশ্য আওয়ামী লীগের ভাত্রপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক আওয়ামী লীগের সভাপতি। তার ইঙ্গিতে নতুন নেতৃত্ব দায়িত্ব নেবে।
সম্মেলনের মঞ্চে অধিক সংখ্যক নেতাকর্মীর বসে থাকা, বন্যার ফেস্টুন, বিলবোর্ড নামাতে বলার পরও তা না নামানোয় উপস্থিত মুল দল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সময় অভাবে বক্তব্য দিতে না পারার কারণে প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার বক্তব্যে ক্ষোপ প্রকাশ করছেন। বলেছেন, অপকর্ম করবে এমন ছাত্রলীগ আমরা চাইনা। দুর্নামের ধারা থেকে বেরিয়ে ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরতে হবে। সুশৃঙ্খল হতে হবে। ওবায়দুল কাদের যথাযথই বলেছেন, ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত হয়ে অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। এ ছাত্রলীগের একসময় নেতৃত্ব দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। তাই হয়তো তিনি এভাবে বলতে পেরেছেন। নতুন নেতৃত্ব সুশঙ্খল ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রত্যয়ী হয়ে ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবেন এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।