ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর গত ২৮ অক্টোবর থেকে গাজায় স্থল অভিযান শুরু করে দখলদার ইসরায়েল। স্থল অভিযানে অংশ নিতে সেদিন রাতে গাজায় প্রবেশ করেন হাজার হাজার ইসরায়েলি সেনা। যারা পরবর্তীতে হামাসের তুমুল প্রতিরোধের মুখে পড়েন।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ডেইলি ইয়েদিয়োত আহরোনোত শনিবার (৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৫ হাজার ইসরায়েলি সেনা আহত হয়েছেন। যার মধ্যে প্রায় দুই হাজার জনকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিকলাঙ্গ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, যারা আহত হয়েছেন তাদের মধ্যে ৫৮ শতাংশই (তিন হাজার সেনা) হাত-পায়ে গুরুতর জখম হয়েছেন। এতে অনেকের হাত-পা পুরোপুরি কেটে ফেলতে হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের রিহ্যাবিলেশন বিভাগের প্রধান লিমোর লুরিয়া বলেছেন, ‘আমরা আগে কখনো এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়িনি। আমাদের এখানে যারা আহত হয়ে এসেছেন তাদের মধ্যে ৫৮ শতাংশের হাত ও পা গুরুতর জখম হয়েছে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘আহতদের মধ্যে ১২ শতাংশের প্লীহা, কিডনি ও অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৭ শতাংশ মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। আমরা জানি এ সংখ্যা সামনে আরও বাড়বে।’
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর থেকে তাদের ৪২০ সেনা নিহত হয়েছে। নিহতের সংখ্যা প্রকাশ করলেও আহতের সংখ্যা প্রকাশ করেনি তারা। ডেইলি ইয়েদিয়োত আহরোনোতের প্রতিবেদনের মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি সেনারা কতটা হতাহতের শিকার হচ্ছে।
অপরদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট গত সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে জানায়, যুদ্ধে হামাসের প্রায় ৫ হাজার যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। সশস্ত্র এ গোষ্ঠীর সবমিলিয়ে ৩০ হাজার যোদ্ধা রয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, ইসরায়েল হামাসকে নির্মূল করার কথা বললেও; যুদ্ধের প্রায় দুই মাস পরও নির্মূলের ধারে কাছে যেতে পারেনি ইসরায়েলি সেনারা।
দখলদার ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় হামাসের সদস্যরা নিহত হওয়ার পাশাপাশি অনেক বেসামরিক মানুষও প্রাণ হারিয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ছোট্ট এ উপত্যকায় ১৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের ৭০ শতাংশই হলেন নারী ও শিশু।