ব্রিটিশ আমলের পুরোনো দণ্ডবিধি বাতিলের আইন ভারতের কেন্দ্রীয় সংসদ লোকসভায় পাস হয়েছে। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উত্থাপিত এ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তিনটি আইন পাস হয়েছে। তবে এ সময় দেশটির বিরোধী দলের সাংসাদরা উপস্থিত ছিলেন না। কারণ শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাদের বড় একটি অংশ বরখাস্ত হয়েছেন।
এই আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ আমলের পুরোনো ভারতীয় দণ্ডবিধি ১৮৬০, ফৌজদারি কার্যবিধি (সিআরপিসি) ও ভারতীয় সাক্ষ্য আইন ১৮৭২ বাতিল হয়ে যাবে।
এই তিনটির স্থলাভিষিক্ত হবে— ভারতীয় নয়া (দ্বিতীয়) বিধি, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা (দ্বিতীয়) বিধি, ভারতীয় সাক্ষ্য (দ্বিতীয়) আইন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের দণ্ডবিধিগুলো বর্তমান যুগে অনুপযোগী। তিনি জানিয়েছেন নতুন আইন, ভারতীয়র ওপর, ভারতীয় সংবিধান এবং মানুষের ভালোর প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে।
অমিত শাহ লোকসভায় তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘আমি নতুন দণ্ডবিধির প্রত্যেকটি কমা, ফুলস্টপ পর্যন্ত পড়েছি। এটির সঙ্গে ভারতের সংবিধানের মূলনীতির সামঞ্জস্য রয়েছে।’
এই আইনটি বর্ষাকালীন অধিবেশনের সময় প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল এবং পরবর্তীতে নতুন তিনটি আইন উত্থাপন করা হয় বলে জানিয়েছেন অমিত শাহ। ভারতীয় মন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, নতুন আইনটি স্ট্যান্ডিং কমিটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে এবং কোনো ধরনের সংশোধন ছাড়াই আইনটি পুনরায় উত্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ভারতের বিরোধী দলগুলো দাবি করেছে, কোনো ধরনের বিতর্ক ছাড়াই আইনটি পাস করাতে বিরোধী সাংসদদের বরখাস্ত করা হয়েছে। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস এবং ডিএমকে এই আইনের তীব্র বিরোধীতা জানিয়েছিল।
কংগ্রেস চেয়েছিল আইনটি পাসের আগে এ নিয়ে বিস্তৃত বিতর্ক হোক। এই বিতর্কে তারা বিচারক, জুরিস্ট, অপরাধবিদ ও সাধারণ মানুষের একটি অংশকে রাখতে চেয়েছিল।
কংগ্রেস আরও দাবি করেছে, সরকার দণ্ডবিধি থেকে ব্রিটিশ আমলের বিধি বাতিল করার দাবি করলেও, কিছু কিছুতে পুরোনো বিধির সামঞ্জস্যতা খুঁজে পাওয়া গেছে। দলটি আগামী বছরের কেন্দ্রীয় নির্বাচন শেষে এ আইনটি পাস করাতে চেয়েছিল।
এছাড়া বিরোধী দলগুলো দাবি করেছে, এই দণ্ডবিধিগুলোর নাম হিন্দি ভাষায় করা হয়েছে। যা ভারতের অন্য ভাষাভাষীদের জন্য অপমানজনক।