ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার গাজা সিটিতে গতকাল শুক্রবার তিন জিম্মিকে ভুলক্রমে হত্যা করে ইসরায়েলি সেনারা। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়।
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের উদ্ধারে নতুন করে আলোচনা শুরু করতে চাপ প্রয়োগ করেন বিক্ষোভকারীরা।
করুণভাবে তিন জিম্মির মৃত্যু ও অন্য জিম্মিদের পরিবারের চাপের মুখে হামাসের সঙ্গে নতুন চুক্তি করতে আবারও আলোচনা শুরু করেছে দখলদার ইসরায়েল।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াল্লা নিউজ শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নতুন চুক্তি করতে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ডেভিড বার্নেয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল এরআগে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, নরওয়ের রাজধানী ওসলোতে মোসাদ প্রধানের সঙ্গে কাতারের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হবে।
তবে ওয়াল্লা নিউজ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই এ দুজন বৈঠক করেছেন।
দুটি সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, ‘এই বৈঠকটি নতুন চুক্তির শুরু মাত্র। নতুন চুক্তির প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ, কঠিন এবং জটিল হবে।’
মোসাদ প্রধান ও কাতারের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ প্রধান বিল বার্নস ও মিসরের গোয়েন্দামন্ত্রী জেনারেল আব্বাস কামেলকেও অবহিত করা হয়েছে।
কাতারের মধ্যস্থতায় গত ২৪ নভেম্বর অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছিল হামাস ও ইসরায়েল। যা সাতদিন স্থায়ী হয়েছিল। ওই সময় ১১০ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস।
তবে সাতদিন পর চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি না করে গাজায় আবারও বর্বর হামলা চালানো শুরু করে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা।
ওই সময় ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভা সিদ্ধান্ত নেয়, হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালিয়ে জিম্মিদের উদ্ধার করা হবে। কিন্তু গত ১৬ দিনে একজন জিম্মিকেও জীবিত উদ্ধার করতে পারেনি তারা। এরবদলে এক জিম্মিকে উদ্ধার করতে গিয়ে আরও কয়েকজন সেনা প্রাণ হারান। সঙ্গে নিহত হন ওই জিম্মিও।
ওই সময় হামাস হুমকি দেয়, তাদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া কোনো জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করতে পারবে না ইসরায়েল।
গাজায় যেসব জিম্মি আছেন তাদের আত্মীয়-স্বজনরা শুরু থেকেই বলে আসছেন, তাদের প্রিয়জনদের উদ্ধারে যেন আবারও আলোচনা শুরু করা হয়। কিন্তু সেটিতে কর্ণপাত করেনি নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন উগ্রপন্থি যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভা। এখন চাপে পড়ে ফের আলোচনায় বসেছে তারা।