১৯ বছর আগে— ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট সুনামিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ২ লাখেরও বেশি মানুষ।
সেদিন ভারত মহাসাগরে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের কাছে সমুদ্রের তলদেশে আঘাত হানে ৯ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প। সেই ভূমিকম্পের প্রভাবে সমুদ্রে ৫৭ ফুট লম্বাসহ অসংখ্য ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। সেই ঢেউগুলো ভারত মহাসাগরে অবস্থিত দেশগুলোর উপকূলে প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে আঘাত হানে এবং এর প্রভাবে লোকালয়ে পানি ঢুকে যায়। এতে পানিতে ডুবে ৯টি দেশের অন্তত ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ নিহত হন।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন এর তথ্য অনুযায়ী, ওই ভূমিকম্পটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, এটির প্রভাবে পুরো পৃথিবী কেঁপে ওঠেছিল। এই কম্পন থেকে কোনো অঞ্চল বাদ যায়নি। বিজ্ঞানীরা দাবি করে থাকেন, ওই ভূমিকম্পের কারণে পৃথিবী এক সেন্টিমিটার নড়ে যায়।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, সুনামি আঘাত হানার পর মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। সুনামিতে এত মানুষের মৃত্যু হয় যে, ওই সময় রাস্তাঘাটে মানুষের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। হাসপাতালগুলো আহতদের চিকিৎসা ও পানিতে ফুলে যাওয়া মরদেহ নিয়ে হিমশিম খায়।
সুনামির পানিতে ইন্দোনেশিয়ার প্রায় সব উপকূলীয় অঞ্চল ডুবে যায়। ওই সময় ৫ লাখ ৭০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েন এবং ১ লাখ ৭৯ হাজার ঘর-বাড়ি ধ্বংস হয়।
ইন্দোনেশিয়ায় ওই সুনামির আঘাতে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪০ হাজার মানুষ প্রাণ হারান শ্রীলঙ্কায়। ভারতে নিহত হন ১০ হাজার। ভারতে সুনামি আঘাত হেনেছিল চেন্নাইয়ে। বলা হয়ে থাকে, ওই অঞ্চলের মানুষ এর আগে কখনো সুনামি দেখেননি। যখন সুনামি এগিয়ে আসছিল। তখন সাধারণ মানুষ বুঝতে পারেননি আসলে কত বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে যাচ্ছিলেন। উপকূলে থাকা মানুষ কিছু বুঝতে না পেরে উল্টো সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
অপরদিকে থাইল্যান্ডে মৃত্যু হয়েছিল ৫ হাজার ৪০০ মানুষের। যারমধ্যে অনেক বিদেশি পর্যটক ছিলেন।