স্বাস্থ্য ডেস্ক:
রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুকে ভর্তি করানো নিয়ে শিশুর বাবা ও চিকিৎসকের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অবশেষে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তার বাবাকে পার্শ্ববর্তী থানায় আটক রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। আজ বুধবার দুপুরের দিকে মুগদা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির।
তিনি বলেন, ঘটনাটি আমাদের কানে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানতে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছি। যতটুকু জেনেছি, আক্রান্ত একটি শিশু নিয়ে তার বাবা হাসপাতালে আসেন। কিন্তু ইতোমধ্যে হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত দুজন শিশুকে একটি বিছানায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নতুন করে শয্যা ফাঁকা না হওয়ায় শিশুর বাবাকে পার্শ্ববর্তী অন্য কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। এরপর কথা কাটাকাটির জেরে শিশুটির বাবা চিকিৎসকের ওপর চড়াও হন।
আহমেদুল কবির বলেন, এক পর্যায়ে শিশুটির বাবা চিকিৎসকের কলার ধরেন এবং কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইতোমধ্যে ৬ শতাধিক ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। এখন আর নতুন করে কোনো রোগী ভর্তিতে মুগদা ক্যাপাবল নয়। চিকিৎসকরা রাত-দিন রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এমন অবস্থায় যদি রোগীর স্বজনরা এভাবে চিকিৎসকদের ওপর হামলা করেন, তাহলে চিকিৎসকরা সবসময় হাইপার হয়ে থাকবেন এবং সেবা দিতে চাইবেন না।
শিশুটির চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিশুটিকে মুগদা হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়েছে। যতটুকু জেনেছি সে ভালো রয়েছে। তবে হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা গেছে, শিশুটিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর সিট নেই জানিয়ে তাকে ভর্তি করা যাবে না বলে জানান কর্তব্যরতরা। তখন শিশুটির বাবা জরুরিভিত্তিতে একজন চিকিৎসককে দেখানোর অনুরোধ করলে জানানো হয় কর্তব্যরত চিকিৎসক বিশ্রামে রয়েছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসাকর্মীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতিতে জড়ান শিশুটির বাবা। এসময় চিকিৎসাকর্মীরা সবাই মিলে তাকে মারধর করেন এবং আটক করে রাখেন। পরে পুলিশ এসে ওই ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে মুগদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মজিদ বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত এক শিশুকে ভর্তি নিয়ে হাসপাতালে লোকজনের সঙ্গে ওই শিশুর বাবার হাতাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থানায় একটি অভিযোগ করেছে। অভিযোগটি মামলা আকারে দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। আর ওই শিশুর বাবা থানায় আটক রয়েছেন। এ ঘটনা সম্পর্কে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নিয়াতুজ্জামানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।