Date: November 22, 2024

দৈনিক বজ্রশক্তি

Header
collapse
...
Home / আন্তর্জাতিক / ‘প্রতি টানে বিষ’, কানাডায় সিগারেটের গায়ে ‘সতর্কবার্তা’

‘প্রতি টানে বিষ’, কানাডায় সিগারেটের গায়ে ‘সতর্কবার্তা’

August 02, 2023 09:37:53 AM   আন্তর্জাতিক ডেস্ক
‘প্রতি টানে বিষ’, কানাডায় সিগারেটের গায়ে ‘সতর্কবার্তা’

ধূমপানের ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে সকলেই জানেন। সিগারেটের প্যাকেটের গায়েও লেখা থাকে— ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এরপরও অনেকে ছাড়তে চেয়েও ছাড়তে পারেন না এই নেশা। আর তাই এবার ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নিলো উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডা।

আর সে অনুযায়ী এবার থেকে শুধু প্যাকেটেই নয়, বরং প্রতিটি সিগারেটের গায়েও লেখা থাকবে এই সতর্কবার্তা। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে এই উদ্যোগ নিয়েছে কানাডা। বুধবার (২ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডাই হতে চলেছে বিশ্বের প্রথম কোনও দেশ যারা তরুণদের ধূমপান শুরু করা থেকে বিরত রাখতে এবং অভ্যস্ত ধূমপায়ীদের এই কাজ ছেড়ে দিতে উৎসাহিত করার জন্য প্রতিটি সিগারেটে আলাদা করে সরাসরি সতর্কবার্তা ছাপতে শুরু করছে।

বিবিসি বলছে, প্রতিটি সিগারেটের গায়ে এসব সতর্কবার্তা লেখা হবে ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষায়। এসব সতর্কবার্তার মধ্যে ‘সিগারেট ক্যান্সার সৃষ্টি করে’ , ‘প্রতিটি টানের মধ্যে বিষ’ এবং ‘ধূমপান পুরুষত্বহীনতার কারণ’— এর মতো বাক্যাংশগুলোও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

এছাড়া ধূমপান শিশুদের ক্ষতি করে, মানবদেহের অঙ্গের ক্ষতি করে এবং পুরুষত্বহীনতা ও লিউকেমিয়া সম্পর্কে সতর্কতাও উল্লেখ থাকবে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মঙ্গলবার থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর হচ্ছে। পরের বছর থেকে কানাডিয়ানরা নতুন সতর্কতা লেবেল-যুক্ত সিগারেট দেখতে শুরু করবেন। ২০২৪ সালের জুলাই মাসের মধ্যে বিক্রিত সমস্ত কিং-সাইজ সিগারেটে এই সতর্কতা লেবেল থাকার বিষয়টি প্রস্তুতকারকদের নিশ্চিত করতে হবে।

এছাড়া ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যে সমস্ত রেগুলার সাইজের সিগারেট এবং টিপিং পেপার ও টিউবসহ ছোট সিগারে এই সতর্কবার্তা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোর ড. রবার্ট শোয়ার্টজ বিবিসি নিউজকে বলেন, এটা ভালো খবর যে, কানাডা ‘এই ধরনের উদ্ভাবনী পদক্ষেপের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে’। তিনি বলেন, ‘সিগারেটের গায়ে থাকা স্বাস্থ্য সতর্কতা সম্ভবত কিছু লোককে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে বাধ্য করবে এবং কিছু যুবককে ধূমপান করা থেকে বিরত রাখতে পারে।’

তিনি নিউজিল্যান্ডকে ইঙ্গিত করে বলেন, তামাক ব্যবহার সীমিত করার ক্ষেত্রে এই দেশটি খুব কম নিকোটিনের সিগারেট চালু করেছে। শোয়ার্টজ বলেন: ‘আমরা যদি তামাকের ব্যবহার কমানোর বিষয়ে সিরিয়াস হই তবে এই ধরনের ব্যবস্থার প্রয়োজন।’

বিবিসি বলছে, তামাক ব্যবহারের কারণে প্রতি বছর কানাডায় ৪৮ হাজার মানুষ মারা যায়। কানাডার পাবলিক সার্ভিস মন্ত্রী জ্যঁ-ইভেস ডুকলোস এর আগে বলেছিলেন, ‘তামাক ব্যবহার কানাডার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য জনস্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি এবং এটি কানাডায় রোগ ও অকালমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ যা প্রতিরোধযোগ্য।’

এদিকে প্রতিটি সিগারেটে আলাদা করে সরাসরি সতর্কবার্তা লেখার পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে কানাডিয়ান ক্যান্সার সোসাইটি, কানাডার হার্ট অ্যান্ড স্ট্রোক ফাউন্ডেশন এবং কানাডিয়ান ফুসফুস অ্যাসোসিয়েশন। তাদের আশা, এই ধরনের পদক্ষেপগুলো মানুষকে বিশেষ করে তরুণদের ধূমপান করা থেকে বিরত রাখবে।

উল্লেখ্য, ধূমপানকে ফুসফুসের ক্যান্সার, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকির কারণ হিসাবে ব্যাপকভাবে বিবেচনা করা হয়। ২০২১ সালের জাতীয় তামাক এবং নিকোটিন সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, কানাডায় ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ধূমপায়ীদের হার প্রায় ১০ শতাংশ।
কিন্তু দেশটিতে ইলেকট্রনিক সিগারেটের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।