ইরান তাদের পারমাণবিক সক্ষমতা আরও বাড়াচ্ছে বলে দাবি করেছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলে, নাতাঞ্জ ও ফোরদৌতে পারমাণবিক কেন্দ্রে আরও বেশি ক্যাসকেড মজুত করছে তেহরান। বিষয়টি তেহরানের কাছ থেকেই জানতে পেরেছে বলে দাবি আইএইএ’র।
ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে ব্যবহৃত সেন্ট্রিফিউজসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতিকে একত্রে ক্যাসকেড বলা হয়। তবে একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ নিয়ে যেমন কথা শোনা যাচ্ছে, আসলে তারা ততটাও করছে না। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে মূলত মাঝারি ধরনের তৎপরতা চালাচ্ছে তেহরান।
গত সপ্তাহে আইএইএ’র গভর্নর বোর্ডের কাছে নিজেদের পারমাণবিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ইরান যথেষ্ট তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছে না- দাবি করে প্রস্তাব উত্থাপন করে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি। তবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে চীন ও রাশিয়া।
আইএইএ গভর্নর বোর্ডে ৩৫টি দেশের প্রতিনিধি রয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, ২০২২ সালের নভেম্বরের পর প্রথমবারের মতো এ ধরনের প্রস্তাব উত্থাপিত হলো। ইরান এই প্রস্তাবের সমালোচনা করে বলেছে, প্রস্তাবটি মোটেও যৌক্তিক নয় নয়। আর এটা স্পষ্ট যে, প্রস্তাবটি যে তড়িঘড়ি করে করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে উত্থাপন করা হয়েছে।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি বলেছে, এ ধরনের প্রতীকী প্রস্তাব উত্থাপনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইরানের ওপর কূটনৈতিক চাপ আর বাড়ানো। এর মধ্যে এক সময় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও প্রস্তাবটি তোলার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এর আগেও আইএইএ গভর্নর বোর্ডে এ ধরনের প্রস্তাব পাস হয়েছে। তারপর দেখা গেছে, ইরান তাদের পারমাণবিক স্থাপনা থেকে নজরদারি ক্যামেরা ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়ে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বাড়িয়েছে।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, আইএইএর প্রতিবেদন থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি বাড়াচ্ছে ও এর মধ্যে শান্তিপূর্ণ কোনো উদ্দেশ্য নেই।
এদিকে, ইরান ঠিক কতগুলো বা কোন ধরনের সেন্ট্রিফিউজ যোগ করছে বা কোন মাত্রায় তা করা হচ্ছে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি কূটনীতিকরা। যদিও একজন কূটনীতিক বলেছেন, ইরান এখনই ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের উৎপাদন বাড়াবে না। ইউরেনিয়ামের সমৃদ্ধি বা মান ৯০ শতাংশ হলে তা অস্ত্রে ব্যবহারের উপযোগী হয়ে ওঠে।
সূত্র: এএফপি, ভয়েস অব আমেরিকা