দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বেশকিছু প্রস্তাব দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এর মধ্যে রয়েছে- একই ব্যক্তি একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী (সরকারপ্রধান) ও দলীয় প্রধান থাকতে পারবেন না। এছাড়া এক ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
বুধবার (২৮ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে অন্তর্বর্তী সরকারের করণীয় বিষয়ে এসব সুপারিশ করে টিআইবি।
গণতান্ত্রিক চর্চায় টিআইবির সুপারিশের মধ্যে আরও রয়েছে- স্পিকারকে সংসদের অভিভাবক হিসেবে দলীয় প্রভাবমুক্ত থেকে ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব পরিহার করে সংসদের সব কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। সংসদে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত করতে হবে বিরোধীদল থেকে। স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের অবর্তমানে সভাপতিমণ্ডলীর অন্তর্ভুক্ত বিরোধীদলীয় সদস্যদের স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘নিরপেক্ষ ও স্বার্থের দ্বন্দ্বমুক্ত সংসদ পরিচালনার জন্য স্পিকারকে সংসদের অভিভাবক হিসেবে দলীয় প্রভাবমুক্ত থেকে ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব পরিহার করে সংসদের সব কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে জনগুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় স্থায়ী কমিটিসহ (সরকারি হিসাব, আইন, বিচার ও সংসদ, অর্থ, বাণিজ্য, স্বরাষ্ট্র, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়) অন্তত ৫০ শতাংশ কমিটিতে বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে সভাপতি নির্বাচন করতে হবে। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সব কার্যক্রমে স্বার্থের দ্বন্দ্ব পরিহার করতে হবে। সংসদীয় ব্যবস্থায় সংসদ সদস্য প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জনবৈচিত্র্য যেমন- তরুণ প্রজন্ম, নারী, আদিবাসী ও অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের মনোনয়নে কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ তরুণ প্রতিনিধি থাকতে হবে।’
এসময় টিআইবি আরও কিছু সুপারিশ করে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে নিজ দলের ওপর অনাস্থা প্রস্তাবের সুযোগ সৃষ্টি। এছাড়া বাজেট ছাড়া আইন প্রণয়নসহ অন্য সব ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের নিজ দলের সমালোচনা ও দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
এছাড়া বিগত সরকারের আমলে দেশের বাইরে টাকা পাচারকারীদের শনাক্ত করার আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি সরকারি সংস্থার মাধ্যমে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।